এতদিন
ওষুধটি কাজে লাগতো কুকুরের চিকিৎসায়৷ বিজ্ঞানীরা তাঞ্জানিয়ার স্কুলছাত্রদের একই
ওষুধ খাইয়ে দেখেছেন প্রচলিত ওষুধের চেয়ে কুকুরের ওষুধটি অনেক বেশি কার্যকর৷ ওষুধটি
অবশ্য খুব শীঘ্রই শিশুদের খাওয়ানো যাবে না ৷
কোনো
দেশে অন্য প্রাণীর জন্য তৈরি করা ওষুধ মানুষকে খাওয়ানোর আগে সরকারি অনুমতির
প্রয়োজন হয়৷ তাঞ্জানিয়ার পেম্বা শহরের স্কুলছাত্রদের কুকুরের যে ওষুধটি খাইয়ে তাক
লাগানো সাফল্য পাওয়া গেছে সেটাও এক্ষুনি দেশে দেশে মানুষের জন্য বিক্রি শুরু করার
সম্ভাবনা নেই৷ তারপরও ‘দ্য ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’-এ প্রকাশিত
একটি প্রতিবেদন বেশ সাড়া জাগিয়েছে৷ প্রতিবেদনে সুইজারল্যান্ডের ট্রপিক্যাল অ্যান্ড
পাবলিক হেলথ ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কুকুরের কৃমিরোগ সারানোর জন্য
ব্যবহার করা হয় এমন একটি ওষুধ তাঞ্জানিয়ার কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের খাইয়ে
তাঁরা দারুণ ফল পেয়েছেন৷
ওষুধটির
নাম অক্সানথেল প্যামট৷ বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এ ওষুধ খাওয়ানোর পর শতকরা ৩১ ভাগ শিশুর
দেহে আর গুড়াকৃমি নেই৷ প্রতিবেদনের মুখ্য লেখক বেনজামিন স্পাইচ ডয়চে ভেলেকে
জানিয়েছেন, আফ্রিকা
অঞ্চলে মানবদেহকে কৃমিমুক্ত করতে অ্যালবেনডাজল এবং মেবেনডাজল নামের যে দুটি ওষুধ
প্রয়োগ করা হয় তার চেয়ে অক্সানথেল প্যামট অনেক বেশি কার্যকর৷
এ
ওষুধে প্রচলিত ওষুধের চেয়ে বেশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বলেও জানিয়েছেন
সুইজারল্যান্ডের গবেষক বেনজামিন স্পাইচ৷ তিনি আরো জানান, অ্যালবেনডাজল
এবং অক্সানথেল প্যামট এক সঙ্গে খাওয়ালে শিশুদের দেহের সব গুড়ো ও ফিতাকৃমি মরে সাফ
হবে৷ গবেষণা করেই নাকি এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন তাঁরা৷
এতকিছুর
পরও এ মুহূর্তে একটি দেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও অক্সানথেল প্যামট মানব শিশুদের
খাওয়ানো যাবে না৷ শুধু ফিলিপিন্সে এখন কুকুরের এই ওষুধ মানুষের বাচ্চাদেরও
খাওয়ানো হয়৷ ১৯৭০-এর দশকেই নাকি সে দেশের বিজ্ঞানীরা এ ওষুধের কার্যকারীতা
সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সরকারের অনুমতি নিয়ে মানবশিশুদেরও খাওয়ানোর ব্যবস্থা
করেছেন৷ তাঁদের এ উদ্ভাবনের খবর এত বছর নাকি বহির্বিশ্বে অজানা ছিল!