শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩
এখন যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়: রাশিয়া
বৃহস্পতিবার রুশ হামলা অব্যাহত ছিল ইউক্রেনে। বুধবার গভীর রাতে অন্তত ন’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে খারকিভে। গভর্নর ওলে সিনেগুবোভ বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি সরকারি পরিকাঠামো, আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ‘কোনও আগাম শর্ত’ ছাড়াই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনা ও যুদ্ধবিরতির আর্জি জানালেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট অ্যালেকজ়ান্ডার লুকাশেঙ্কো। যদিও বন্ধুর আর্জি প্রকাশ্যেই খারিজ করে দিল ক্রেমলিন। তারা জানাল, এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয়।
নিজের দেশে একটি বক্তৃতায় লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘‘আরও বাড়াবাড়ি হওয়ার আগে আমাদের এখন থামা উচিত। আমি ঝুঁকি নিয়েই এই শত্রুতা শেষের পরামর্শ দিচ্ছি... যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হোক।’’ ১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন লুকাশেঙ্কো। এই দীর্ঘ সময় তাঁর রাষ্ট্রনেতা পদে বহাল থাকার পিছনে রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব অন্যতম কারণ। বেলারুশের মাটি ব্যবহার করেই ইউক্রেনে প্রথম আগ্রাসন শুরু করেছিল রাশিয়া। এর পরেও একাধিক বার বেলারুশকে ব্যবহার করেছে তারা। সেখানে রুশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ চালিয়েছে। অস্ত্র মজুত করেছে। গোটা যুদ্ধ-পর্বে মস্কোর পাশে থেকেছে মিনস্ক। আচমকা লুকাশেঙ্কোর যুদ্ধ-বিরতির পরামর্শ তাই কিছুটা হলেও ব্যতিক্রমী ঘটনা। তিনি আরও বলেন, ‘‘জমি, পুনর্নির্মাণ, নিরাপত্তা বা অন্যান্য যা সমস্যা রয়েছে, সব কিছু সমঝোতার পথে সমাধান করা যায়। আর সেটাই করা উচিত।’’
লুকাশেঙ্কোর বক্তব্য, তিনি যুদ্ধ থামানোয় জোর দিচ্ছেন, কারণ এ ভাবে চললে পুরোদমে যুদ্ধ লাগবে। সেটা হবে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’। তিনি বলেছেন, ‘‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পরমাণু অস্ত্রের আগুন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে দিগন্তে।’’ দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার রণকৌশল অনুযায়ী বেলারুশে পরমাণু অস্ত্র ঘাঁটি তৈরি করা হবে। সে ক্ষেত্রে পশ্চিমের নিশানা থেকে হয়তো মিনস্ক বেঁচে যাবে।
আজও রুশ হামলা অব্যাহত ছিল ইউক্রেনে। গত কাল গভীর রাতে অন্তত ন’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে খারকিভে। গভর্নর ওলে সিনেগুবোভ বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি সরকারি পরিকাঠামো, আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি রকেট জমিতে আছড়ে পড়ে, প্রকাণ্ড বিস্ফোরণে আকাশ ঢেকে যায়।’’ বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। তবে আপাতত মৃত্যুর খবর নেই। ইউক্রেনের অন্যান্য প্রান্তেও হামলা চলছে। রাশিয়া জানিয়েছে, এখন কোনও ভাবেই যুদ্ধ থামানো হবে না। ক্রেমলিনের বক্তব্য, এখন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলে, ইউক্রেনে যে লক্ষ্য নিয়ে ‘বিশেষ সেনা অভিযান’ শুরু হয়েছিল, তা পূরণ হবে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ আজ সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, লুকাশেঙ্কোর আর্জি তাঁরা শুনেছেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে কথা বলবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সূত্রঃ আনন্দ বাজার পত্রিকা